বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৩ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি:
তিনি বলেন, আমরা চাই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হোক।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে দিয়েছে। তারা সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচন দেবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ ভোট দিয়ে সরকার গঠন করবে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকারকে আপনারা সাহায্য করবেন। আন্দোলনের ফসল এই সরকার। আমরা তাদেরকে সেই সহযোগিতা দেবো, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা গণতন্ত্রের পক্ষে থাকবে ও গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।’
‘আমরা চাই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হোক। আমরা তাদের যৌক্তিক সময়ও দিতে চাই। একটি কথা আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই গণতন্ত্রের বিকল্প কিছুই নাই। ভোটের কোনো বিকল্প নাই। সেই গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি আমরা,’ বলেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার ইতোমধ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। আরও দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ নিতে হবে। যেসব চক্রান্তকারীরা এখনো সরকারের মধ্যে বসে আছে তাদের অবিলম্বে বের করে দিতে হবে।’
‘যারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী, যারা কাজ করেছে এই সরকারের পক্ষে, তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সীমা লঙ্ঘন করেছিল হাসিনা। অহংকার, কী অহংকার তার। আল্লাহ হুকুম দেখেন, আবার তাকে পালিয়ে যেতে হলো সেই জায়গায় যেখানে তার গোড়া পোতা,’ বলেন মির্জা ফখরুল।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘এখনো সময় আছে আপনারা আর ঝামেলা করবেন না। কারণ ঝামেলা করলে আপনারা টিকতে পারবেন না। আজকেও তো চেষ্টা করেছিলেন। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে আপনারা ফুল দেবেন। কারও কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু ছাত্ররা তা হতে দেয়নি। কারণ ওই মানুষটাকে আর কেউ দেখতে চায় না। হাসিনার চেহারা তারা আর দেখতে চায় না। সারা বাংলাদেশে অত্যাচার-নিপীড়ন চালিয়ে গেছে, এই খুনি হাসিনার বিচার চাই।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এখন আমরা চাই এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যাদের ওপর জনগণ আস্থা দিয়েছে, একটি স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে দিয়েছে। তারা নির্বাচন দেবে, একটি সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচন দেবে, সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ ভোট দিয়ে সরকার গঠন করবে।’
‘এখন ষড়যন্ত্র হচ্ছে মাইনোরিটির ওপর অত্যাচার হচ্ছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়কে ক্ষেপিয়ে তাদের দিয়ে ঢাল বানিয়ে আরেকটা কৌশল আবিষ্কার করেছে কীভাবে অস্থিতিশীলতা তৈরি করা যায়। সেই চেষ্টা আওয়ামী লীগ করছে। তাদের মূল লক্ষ্য দেশের ভেতর অস্থিতিশীলতা করে ভারতের সাহায্য নিয়ে যদি ঢুকে পড়া যায় তাহলে হয়ত তারা রক্ষা পাবে।’
‘ভালোয় ভালোয় এসব ঝামেলা না করে আপনারা আত্মসমর্পণ করেন। যারা এখনো বাইরে আছেন, এদিক-ওদিক করছেন তারা একবার দেখবেন। গতকাল আইনমন্ত্রী ও উপদেষ্টা সালমান কী অবস্থায় তাদেরকে নিয়ে গেছে কোর্টে। আল্লাহ তার বিচার করে দিয়েছে। এদের বিচার করতে হবে আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী আইনে। মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে, হত্যা করেছে, গণহত্যা করেছে,’ বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমরা আমাদের দাবি সোচ্চার করি। যারা অন্যায়ভাবে অত্যাচার-নিপীড়ন করেছে, টাকা লুণ্ঠন, বিদেশে টাকা পাচার করেছে তাদের বিচার করতে হবে।’
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আর আরেকটা কথা মনে রাখবেন। আমাদের দিকে কেউ যেন আঙুল না দিতে পারে যেন আমরা খারাপ কাজ করেছি। এটা শহীদ জিয়ার দল। সবাই একত্রিত থাকেন, ঐক্যবদ্ধ থাকেন। এই সরকারকে আমাদের সাহায্য করবেন।’